ডায়াবেটিস (Diabetes) প্রতিরোধে ও চিকিৎসায় হিজামা থেরাপী


ডায়াবেটিস কি?
মানবদেহের পেটের উপরের অংশে প্যানক্রিয়াস বা অগ্নাশয় নামক একটি গ্রন্থি রয়েছে। এই গ্রন্থি থেকে ইনসুলিন নামক রস নিসৃত হয়। আমরা যখন খাদ্য গ্রহণ করি, তখন রক্তে শর্করা বা চিনি মিশে যায়। ইনসুলিন এই রক্তের শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করে।
ডায়াবেটিস রোগের কারণে অগ্নাশয় প্রয়োজনের তুলনায় কম ইনসুলিন তৈরি করে। এর ফলে রক্তে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। রক্তে অধিকমাত্রায় চিনি থাকার কারণে শরীরের প্রায় সব রক্ত সঞ্চালন তন্ত্র, বিশেষ করে স্নায়ুতন্ত্র এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন—হৃৎপিণ্ড, কিডনি, চোখ ও মস্তিষ্ক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।
ডায়াবেটিস একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ। সঠিক জীবনযাত্রা ও চিকিৎসার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব।
ডায়াবেটিস দুই ধরণের হয়ে থাকে:
-
টাইপ–১:
এ ধরনের রোগীর দেহে একেবারেই ইনসুলিন তৈরি হয় না। তাই ইনজেকশনের মাধ্যমে ইনসুলিন নিতে হয়। -
টাইপ–২:
এ ধরনের রোগীর দেহে আংশিকভাবে ইনসুলিন তৈরি হয়। এক্ষেত্রে ওষুধ সেবনের মাধ্যমে অগ্নাশয়ের কোষকে শরীরের জন্য পরিমিত ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করা হয়।
এই রোগ সাধারণত জীবনযাত্রার ধরন, বংশগত বৈশিষ্ট্য এবং পরিবেশগত কারণে হয়ে থাকে। এটি সংক্রামক বা ছোঁয়াচে নয়। যখন রক্ত ও মূত্রে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়, তখন এই রোগের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়।
লক্ষণসমূহ:
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
- অতিরিক্ত পিপাসা লাগা
- ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া
- যথেষ্ট খাবার গ্রহণের পরও ওজন কমে যাওয়া
- দুর্বলতা অনুভব হওয়া
- চোখে কম দেখা
- চামড়া শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যাওয়া
- ক্ষত সহজে না শুকানো
ডায়াবেটিস সম্পর্কে চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতামত:
চিকিৎসার মাধ্যমে ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিরাময় করা যায় না, তবে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ডাক্তারদের মতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৩টি ‘D’ মেনে চলা জরুরি:
- Discipline (শৃঙ্খলা)
- Diet (খাদ্য নিয়ন্ত্রণ)
- Dose (ওষুধ সেবন)
ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসায় হিজামা থেরাপি:
প্যানক্রিয়াস পয়েন্টসহ শরীরের নির্দিষ্ট কিছু পয়েন্টে একাধিকবার হিজামা থেরাপি গ্রহণের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা সম্ভব।
ডায়াবেটিস রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হিজামা থেরাপির আওতায় আনা উচিত। কাপিং বা হিজামার মাধ্যমে হাড়ক্ষয়, উচ্চ রক্তচাপ, পিঠের ব্যথা, কোমরের ব্যথা, পা অবশ হওয়া বা ঝিঁঝিঁ ধরাসহ যেকোনো ধরনের ব্যথাজনিত রোগের চিকিৎসা করা যায়।
হিজামা থেরাপি সম্পূর্ণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত এবং এটি অন্যান্য চিকিৎসার সাথে গ্রহণে কোনো বাধা নেই।
More reading
View all
পিঠব্যথা ও মেরুদণ্ডজনিত সমস্যায় হিজামা থেরাপির কার্যকারিতা
পিঠব্যথা ও মেরুদণ্ডের সমস্যার প্রাকৃতিক এবং পার্শপ্রতিক্রিয়াহীন সমাধান হিসেবে হিজামা থেরাপির উপকারিতা ও প্রয়োগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।

হিজামা কিভাবে করতে হয়, কি কি বেনিফিটস আছে এতে ?
হিজামা একটি সুন্নাহভিত্তিক প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি, যা শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক সুস্থতায় ভূমিকা রাখে। রাসূল (সাঃ)-এর প্রিয় এই চিকিৎসা পদ্ধতির উপকারিতা ও বৈজ্ঞানিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে জানুন বিস্তারিত।

রোগ নির্ণয়ের নামে তান্ত্রিকতা, ভণ্ডামি ও ইস্তিখারার অপব্যবহার
রোগ নির্ণয়ের নামে দূর থেকে হাজিরা, ইস্তিখারা, তান্ত্রিকতা, যাদু ও গায়েবী তথ্য দাবি করে যারা চিকিৎসা দেয় — তারা প্রকৃতপক্ষে ধোকাবাজ ও ঈমান ধ্বংসকারী। ইসলাম কী বলে এ বিষয়ে? বিস্তারিত জানুন এই লেখায়।